Warning: Creating default object from empty value in /home/nilbatayon24/public_html/wp-content/themes/newstheme0/lib/ReduxCore/inc/class.redux_filesystem.php on line 29
শিরোনামহীন– বিষণ্ণ সুমন শিরোনামহীন– বিষণ্ণ সুমন – নীল বাতায়ন
Warning: Use of undefined constant jquery - assumed 'jquery' (this will throw an Error in a future version of PHP) in /home/nilbatayon24/public_html/wp-content/themes/newstheme0/functions.php on line 23
নোটিশঃ
আমাদের ওয়েবসাইটের কাজ চলছে.......
শিরোনামঃ
সাহিত্য শিখা পরিষদের ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তে আবারো হাবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, বিক্ষুব্ধ সাধারন ছাত্র-ছাত্রী কবি আব্দুল লতিফ প্রামাণিক’র লেখক হয়ে ওঠার গল্প আজ নীলবাতায়ন পত্রিকার সম্পাদকের জন্মদিন নীলফামারীতে মেসি ভক্তদের অন্যরকম জন্মদিন উদযাপন ভালোবাসার রং —-জাফরিন আক্তার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আয়োজনে মহান ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধান্জলী অর্পন ও মোমবাতি প্রজল্লন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ব্র্যাকের কৃষি সহায়তা প্রদান। নীল বাতায়ন নিউজ ডেক্স এসো সেবা করি সামাজিক সংগঠন এর পক্ষ থেকে শতাধিক কম্বল বিতরণ-২০২৩ কবি শুভাশিস সাহু এর লেখা কবিতা-সাগরের প্রবল ঢেউয়ে
শিরোনামহীন– বিষণ্ণ সুমন

শিরোনামহীন– বিষণ্ণ সুমন

শিরোনামহীন
বিষণ্ণ সুমন

মায়ের প্রচন্ড চেচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গলো আমার। সকাল বেলায় দিনের শুরুতেই এমন চিৎকার চেচামেচি কারোই ভালো লাগার কথা না। আমারো লাগলো না। বরং এতো সাধের ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে বলে মনটাই খারাপ হয়ে গেল। মা যে কি, সারাক্ষণ পিচ্চিটার পেছনে লেগে থাকে। আর পিচ্চিটাও পারে বটে। এতো বকা, এতো মার খাবার পরও ওর মাঝে কোনো পরিবর্তন নেই। যতই বলা হোক না কেন, ও যা করছে তাই করতে থাকবে। যেন এসব চিৎকার চেচামেচিতে ওর কিছুই আসে যায় না। পিচ্চিটার জন্য আমার মায়াই লাগে। কতই বা বয়স ওর। খুব বেশী হলে বারো কি তের হবে। এ বয়সের ছেলেরা দিব্যি বই-খাতা হাতে নিয়ে স্কুলে যায়। অথচ ভাগ্যের ফেরে ওকে কিনা মায়ের লাথি-গুতো খেতে হচ্ছে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো আমার বুক চিড়ে। ইতোমধ্যে মায়ের চিৎকারের উচ্চতা আরো বেড়ে গেছে। নাহ্ আর শুয়ে থাকার কোন মানে হয় না। লাফিয়ে বিছানা ছাড়লাম। পায়ে চপ্পল গলিয়ে রুম ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। দরজার কাছে নতমুখে দাঁড়িয়ে আছে পিচ্চি। একগাদা কাঁথা-বালিশ ওর পায়ের কাছে মেঝেতে পরে আছে। ঘরের ভেতর ঘুরতে থাকা আাঁশটে গন্ধটাই বলে দিচ্ছে, ও আজো বিছানায় হিসি করে দিয়েছে। হুমম, এই তাহলে ব্যাপার । কিন্তু, এটা তো নৈমিত্যিক ঘটনা। এটার জন্য তো মার এতটা খচে যাবার কথা না। ব্যাপার নিশ্চয়ই অন্য কিছু।

“কি হয়েছে মা ? এতো রাগ করছো কেন? ” ভয়ে ভয়ে জানতে চাইলাম।

“আরে দেখনা, নবাবজাদা আজকেও বিছানায় প্রস্রাব করে দিয়েছে। এদিকে সকাল পার হয়ে দুপুর গড়াচ্ছে, আমাদের নবাবজাদীনির এখনো কোন খবর নেই।” মুখ ঝামটিয়ে উঠলেন মা।

মার মেজাজ খারাপের মূল কারণটা এবার পরিস্কার হয়ে গেল। কাজের মেয়ে রাহেলা এখনো আসেনি। আসলে ছুটা বুয়াদের এই এক সমস্যা। চাইলেও সময় মেইন্টেন করতে পারেনা। এক বাসায় একটু দেরী হলেই হয়েছে, বাকী সবগুলো বাসাতেই সেদিন আপনা থেকেই দেরী হতে থাকবে। আসলে কেউই তো আর ছাড় দিতে চায় না। ফলে চাইলেও আর সঠিক সময়ে কারো কাজ শেষ করা যায় না। কিন্তু এসব কথা তো এখন মাকে বলা যাবেনা। বললে পুরো রাগটাই তখন মোড় ঘুরে আমার দিকে চলে আসবে। কাহাথক আর সেধে বকা খাওয়া যায়। অগত্যা নিপাট ভদ্র ছেলের মত টয়লেটে ঢুকে গেলাম। টয়লেট থেকে বের হয়ে এসে দেখি ঘরের পরিবেশ তখন নিঝুম রাতের মত ঠান্ডা। কারণটা বুঝতে দেরী হলোনা। রান্নাঘরে রাহেলার সাড়া পাওয়া গেল। তারমানে মা এখন শান্ত। হাত-মুখ ধুঁয়ে নাস্তা খেতে বসে গেলাম। আড়চোখে পিচ্চিকে খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু কোথাও দেখতে পেলামনা। সেই সঙ্গে তার নোংড়া কাথা-বালিশও হাওয়া।

নাস্তা সেরে নিজের রুমে চলে এলাম। পড়ার টেবিলে বসে সবে বইটা হাতে নিয়েছি, এমনি সময় পিচ্চি এসে ঢুকলো। দাঁত বের করে হাসছে। মনেই হয়না কিছুক্ষণ আগে ওর উপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাপটা গিয়েছে।
“কিরে, হাসছিস কেন ? একটু আগেইনা মায়ের হাতে মার খেলি !” আমি কিছুটা অবাক হয়ে জানতে চাইলাম। ওর চোখ-মুখ আর্ত হয়ে উঠছে দেখে যোগ করলাম, “আরে, দূর বাদ দেতো। এই বয়সে বিছানায় হিসি করা কোন ব্যাপারী না। আর মা তো মারবেই, এই জন্য কাঁদতে হয় নাকি? কই আমারে কোনদিন কাঁদতে দেখছস ?”

ফিক করে হেসে দিল পিচ্চি। “ভাইজান আপনেও কি বিছনায় মুইত্যা দেন নাহি ? কই আপনেরে তো কোনদিন কেথা-বালিশ ভিজাইতে দেহি নাই।”

হো হো করে হেসে উঠলাম। আমার বয়স এখন ১৫ চলছে। আজ বাদে কাল মেট্রিক পরীক্ষা দেবো। এখন আর আমি সেই ছোট্টটি নেই। বিছানায় প্রাতঃকার্য করার বয়স যে অনেক আগেই পার হয়ে এসেছি। “ধ্যাত কি যে বলিস না। আমি কি তোর মত পিচ্চি নাকি? আমি এখন বড় হয়েছি না।” বলেই বুকটা সামনে ঠেলে দিয়ে সিনাটা টান টান করলাম, যেন এটাই আমার বড় হবার একমাত্র প্রমান।

সহসা আনমনা হয়ে গেল পিচ্চি। যেন অনেক দূর থেকে কথা বলছে এমনভাবে বলে উঠলো, “আমি কবে বড় হমু ভাইজান?” পরক্ষণেই মাথা নাড়াতে থাকলো, “না না আপনের মত না, আমি রাহেলা বুয়ার মত বড় হইতে চাই। তাইলে মায় আমারে কিছু কইবো না। দেহেন না মায় আমারে কত মারে। কিন্তুক রাহেলা বুয়ারে কিছুই কয় না। হেয় মায়ের সব কাম কইরা দেয় দেইখ্যা, মায় হেরে কিছুই কয় না। হের মত বড় হইলে আমিও সব কাম করবার পারুম, তহন মা আর আমারেও কিছুই কইবো না।

ওর কথা শোনে আমার বুকের ভেতরটা নড়ে উঠলো। ছেলেটার চিন্তা-ভাবনা শুনে আশ্চর্য লাগলো। এমনি সময় রাহেলা এলো ভেতরে। ওকে দেখেই খেকিয়ে উঠলো, “এই তুই এহানে কি করস? তুই জানোসনা, এহন বাইজানের পড়নের টাইম।’ তারপর আমার দিকে ফিরলো, “আপনারেও কই বাইজান। এদ্দুর একটা ফোলার লগে আপনের এত্তো কথা কিয়ের ? আফনে পড়েন।” হাতের ঝাড়ুটা মেঝেতে বিছিয়ে ফের পিচ্চির দিকে ফিরে যোগ করলো, “তুই অহন যা। দেখতাসস না, আমি ঘর ঝাড়ু দিবার আইছি।”

রাহেলার বয়স আমার কাছাকাছি হবেই। কিন্তু ওর ভাব দেখে মনে হয়, যেন অনেক বড় কেউ।

শেয়ার করুন




© সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত © ২০২০ (নীলবাতায়ন২৪)
Desing & Developed BY Silkyserver.Com